গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা সার্কুলার ২০২২
প্রথমবারের মতো গত শিক্ষাবর্ষে অর্থাৎ 2021/22 শিক্ষাবর্ষে ২০ সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ে জিএসটি বা গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করা হয়েছিল। গত বছর নভেম্বরে অর্থাৎ 2022 সালে গুচ্ছ পরীক্ষার শেষ হয়ে।
ফলাফল দেওয়ার পর গুচ্ছে থাকা যে ২০ বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে তারা নিজেদের মতো করে সার্কুলার প্রকাশ করেছে। এবং সার্কুলার প্রকাশ করার পর এখন পর্যন্ত বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আসন ফাঁকা রয়েছে।
এই আসন ফাঁকা রেখেই গত শিক্ষাবর্ষে কাজ শেষ করে ক্লাস শুরু করতে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। গতবছর শিক্ষার্থীদের সুবিধার জন্য এই গুচ্ছ পরীক্ষা আয়োজন করা হয়েছিল।এই বছরেও সেই ধারাবাহিকতা থাকবে।
গতবছর গুচ্ছ পরীক্ষায় কি ভুল ছিল কেনই বা এই আসন গুলো ফাঁকা রয়েছে?কোন বিশ্ববিদ্যালয় কি পরিমান আসন ফাঁকা রয়েছে সেকেন্ড টাইম সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে কবে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা শুরু হবে এই সকল বিষয় নিয়ে আজকের পোস্টে আমরা আলোচনা করব।
গত শিক্ষাবর্ষের গুচ্ছ পরীক্ষায় কি ভুল ছিল?
প্রথমে আলোচনা করব গত গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় কি ভুল গুলো হয়েছিল যার কারণে এখনও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আসন সংখ্যা ফাঁকা রয়েছে।
প্রথম যেই সমালোচনা হয়েছিলাম সেটা হচ্ছে GST বা গুচ্ছ পরীক্ষা গ্রুপ পরিবর্তন। অর্থাৎ গ্রুপ বা বিভাগ পরিবর্তনের কোন অপশন ছিল না। এটা নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়েছিল।
দ্বিতীয় রিপোর্টটি ছিল ভর্তি পরীক্ষার সাধারণ জ্ঞান কে বাদ দিয়ে আইসিটি কে যুক্ত করা।
তৃতীয় যে ভুলটি ছিল সেটা হচ্ছে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা যখন অনুষ্ঠিত করার চিন্তাভাবনা করা হয় তখন একটি আবেদন ফি নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিছুদিন পর সেই আবেদন ফি দ্বিগুণ করা হয়! এছাড়া বিজ্ঞান শাখার শিক্ষার্থীদের সিলেকশন এর মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছিল।
গত শিক্ষাবর্ষের যখন প্রথমে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা চিন্তা করা হয়েছিল তখন বলা হয়েছিল সকল শিক্ষার্থীদের কে সুযোগ দেওয়া হবে। কিন্তু পরবর্তীতে দেখা যায় সিলেকশন প্রসেস এর মধ্য দিয়ে বিজ্ঞান শাখার অনেক শিক্ষার্থীকে ভর্তি পরীক্ষায় সুযোগ দেওয়া হয়নি।
কৃষি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা ২০২৩
বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম | ওয়েবসাইট |
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ | bau.edu.bd |
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুর | bsmrau.edu.bd |
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা | sau.edu.bd |
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট | sau.ac.bd |
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালী | pstu.ac.bd |
চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম | cvasu.ac.bd |
খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা | kau.edu.bd |
হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় | hau.ac.bd |
কৃষি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা সার্কুলার 2022
এবার আসি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় কথা নিয়ে। গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় দেখা গেল ফলাফল দেওয়ার পর বিশেষ করে বিজ্ঞান শাখার B-unit এবং C-unit রেজাল্ট নিয়ে অনেক সমালোচনা আসে। এবং পরবর্তীতে যখন রেজাল্ট চেঞ্জ নিয়ে কথাবার্তা শুরু হয় তখন এই রেজাল্ট চ্যালেঞ্জ করার জন্য অযৌক্তিক একটি ফি নির্ধারণ করা হয়।
এবং সর্বশেষ যখন ভর্তি পরীক্ষা শেষ হয়ে গেল তখন ভর্তি পরীক্ষা যুক্ত থাকা অনেক সদস্যই কিছু অযৌক্তিক কথা বলেছিলেন। এর মধ্যে একটি ছিল "সেকেন্ড টাইমে যারা ভর্তি হবে তাদের সুযোগ না দেওয়া"। এগুলো ছিল গত বছর ভর্তি পরীক্ষার বিভিন্ন সমস্যা।
এবারও কি একই ভুলে ধারাবাহিকতা থাকবে না ভুলগুলো শুধরে নিবে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা কমিটি?
এক্ষেত্রে কমিটির বিভিন্ন সদস্যরা বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে বলেছে গত শিক্ষাবর্ষের যে ভুলগুলো ছিল এই শিক্ষাবর্ষে তারা সেগুলোর পুনরাবৃত্তি করতে চায়না। অর্থাৎ ভুল গুলো তারা সংশোধন করবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আসন ফাঁকা আছে কেন?
অনেকের প্রশ্ন আসতে পারে এত শিক্ষার্থী গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার পরেও এখনো বিশ্ববিদ্যালয়ের আসন ফাঁকা আছে কেন?
গুচ্ছে বারোশো টাকা ফ্রি দেওয়ার পর শিক্ষার্থীরা মনে করেছিল গুচ্ছে থাকা ২০টি বিশ্ববিদ্যালয় থাকবে সেখানে আর কোন ফি দিতে হবে না, অর্থাৎ এই বারোশো টাকা দিয়েই ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করতে পারবে।
কিন্তু ব্যাপারটা এমন ঘটেনি। ভর্তি পরীক্ষার পর ঘুরতে থাকা ২০টি বিশ্ববিদ্যালয় তারা তাদের নিজেদের মতো করে ফি নির্ধারণ করে। এবং এই সেগুলো হচ্ছে ফরম ফি শিক্ষার্থীরা সেখানে আবেদন করবে সেখানেই ফিট এর মাধ্যমে এবং সিলেকশন প্রসেস এর মাধ্যমে তারা নির্বাচিত হবে।
তারমানে দুটি ধাপের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের কে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হতে হয়েছে। দুটি ধাপে শিক্ষার্থীদের কে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হওয়ার ফি এর কারণে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে তারা আবেদন করতে পারেনি। একটি অন্যতম কারণ।
আরেকটি কারণ হচ্ছে গুচ্ছে থাকা যে 20 বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে তারা জিপিএ যাদের বেশি শুধু সেই সকল শিক্ষার্থীদের কি বেশি গুরুত্ব দিয়েছিল। তাই যারা কম জিপিএ প্রাপ্ত শিক্ষার্থী রয়েছে তাদের তেমন একটি সুযোগ ছিল না।
এজন্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনেক আসন ফাঁকা রয়েছে।যদি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কম জিপিএ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের সুযোগ দিত তাহলে এই আসনগুলো আর ফাঁকা থাকত না।
গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় কতগুলো আসন ফাঁকা রয়েছে
একেক বিশ্ববিদ্যালয় একেক আসন ফাঁকা রয়েছে। যেমন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়া তে এই মুহূর্তে 1270 টি আসন ফাঁকা রয়েছে।জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় 543 টি আসন ফাঁকা রয়েছে।মাওলানা ভাসানী শহ অন্যান্য যেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো রয়েছে সেখানেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আসন ফাঁকা রয়েছে।
এদিকে সবচেয়ে চিন্তার বিষয় হচ্ছে এইচ এস সি রেজাল্ট কিন্তু দিয়ে দিয়েছে। রেজাল্ট দেওয়ার পর শিক্ষার্থীরা অর্থাৎ নতুন শিক্ষার্থীরা যারা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হতে চায় তারা প্রিপারেশন নেওয়া শুরু করে দিয়েছে।
ফলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ চাচ্ছে এই 20/21 সালের এর ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়ে তারা ক্লাস শুরু করতে। যেন তারা নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি করতে পারে।অর্থাৎ বেশি দেরি হলে প্রথম পর্বের একটি ইয়ার গ্যাপ পড়বে অর্থাৎ সেশনজট পরার একটা সম্ভাবনা আছে।
গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার সিলেবাস ২০২৩
অনেকেই জানতে চেয়েছেন এবার নতুন যেই গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা হবে সেখানে কোন সিলেবাস ফলো করা হবে। সেখানে কি সংক্ষিপ্ত সিলেবাস ফলো করা হবে নাকি পূর্ণ সিলেবাস ফলো করা হবে?
এ নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। যে কোন সিলেবাসে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে। তবে আমাদের শিক্ষামন্ত্রীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা চাচ্ছেন যে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হোক।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য কিছু বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য মনে করেন যে বিশ্ববিদ্যালয়ের জায়গাগুলো কোন সংক্ষিপ্ত সিলেবাস নেওয়া উচিত নয় সেখানে পূর্ণ সিলেবাস নেওয়াই ভালো।
দ্বিতীয়বার গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে দ্বিতীয়বারের মতো গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ আছে। আপনাদের জানিয়ে রাখি অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে দেওয়া হোক বা না হোক। গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষায় যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো রয়েছে সেখানে জগন্নাথ ছাড়া অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কিন্তু সেকেন্ড টাইমার দেয়ার সুযোগ দেওয়া হয়।
তবে এবার কিছু বিশ্ববিদ্যালয় কিন্তু এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে পারে। কিন্তু সব বিশ্ববিদ্যালয়ে সিদ্ধান্ত নিবে না। অনেক বিশ্ববিদ্যালয় তারা সেকেন্ড টাইমার দিয়ে সুযোগ দিবে। তাই আপনাদের প্রস্তুতি বন্ধ করলে চলবে না অবশ্যই প্রস্তুতি চালিয়ে যাবেন।
কবে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা শুরু হবে
গত শিক্ষাবর্ষে অর্থাৎ 2020/21 শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিক আবেদন শুরু হয়েছিল এপ্রিল মাসের দিকে। এবারও হয়তো এপ্রিল বা মেয়ের দিকে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার কার্যক্রম শুরু হতে পারে। পরবর্তীতে প্রথম ধাপ কমপ্লিট হওয়ার পর দ্বিতীয় ধাপ আসবে। তারপর চূড়ান্ত নির্বাচিত তালিকা প্রকাশ করা হবে।
প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা এই ছিল আজকের পোস্ট। আজকে আমরা জানলাম গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা 2022 এর সর্বশেষ আপডেট। আজকের পোষ্টে জানলাম গত বছর গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় কি কি ভুল হয়েছিল এবং এই বছর গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা কিভাবে নেওয়া হবে এবং একই ভুল করবে কিনা সে সম্পর্কে।
কৃষি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা ২০২২ সম্পর্কে সর্বশেষ আপডেট এবং নতুন কোনো তথ্য জানতে আমাদের এই ওয়েবসাইটে এবং এই পোষ্টের নিয়মিত নজর রাখুন আমরা এখানে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা সম্পর্কে নিয়মিত আপডেট দিয়ে থাকব। এছাড়াও আপনার যদি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা সম্পর্কে কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে জানাবেন।ধন্যবাদ
দেখা নিন