জিহ্বায় ঘা এর ঔষধ এর নাম
আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ পোস্টে আপনাকে স্বাগতম। এই পোস্টে আমি খুবই কমন একটি সমস্যা নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি। সেটি হচ্ছে জিহ্বায় ঘা হলে কি করনীয় এবং জিহ্বায় ঘা এর ঔষধ এর নাম নিয়ে আপনাদের বলার চেষ্টা করব।
জিহ্বায় ঘা হলে কি করবেন তা জানার আগে আপনার জানা উচিত জিহ্বায় ঘা কেন হয়? এবং এই জিহ্বায় ঘা কি?
জিহ্বায় ঘা সাধারণত এক ধরনের উন্মুক্ত ক্ষত যেটি আমাদের জিভের উপরে জিভের তলায় এবং জিভের পিছনে দেখা দিতে পারে। জিভের ঘা এর কারণ অনেকটা মুখে ঘায়ের কারনের মতই।
জিহ্বায় ঘা এর লক্ষণ ও উপসর্গ
জিহ্বায় ঘা হলে জিহ্বার উপরের অংশে ছোট ছোট ছোপ ছোপ ফোসকা বা ক্ষতির তৈরি হতে পারে। এটি আকারে বড় হতে পারে আবার ছোট হতে পারে।
সাধারণত এই ফোসকা বা ক্ষত জিভের উপরে বা জিভের পিছনে এবং জিভির তলায় দেখা দিতে পারে। এই ক্ষত গুলো খুবই যন্ত্রণাদায়ক হয়ে থাকে। সাধারণত ক্ষতগুলো লাল রঙের দেখা যায় তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এগুলো সাদা বা হলদের রংয়ের হয়ে থাকে।
খাবার খাওয়ার সময় এই ক্ষত থেকে প্রচন্ড ব্যথা অনুভূত হয়। এছাড়াও মসলাদার বা ঝাল খাবার খাওয়ার সময় প্রচন্ড জ্বালাপোড়া হয় জিভের ভিতর।
টক বা অতিরিক্ত ঝাল খাওয়ার খাওয়ার সময় এই ক্ষতগুলোতে জ্বালাপোড়া বা ব্যথা অনুভূত হতে পারে।
জিহ্বায় ঘা হয় কেন
জিহ্বায় ঘা বা ক্ষত হওয়ার প্রধান কারণ হচ্ছে ছত্রাক বা ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণ কারণে। যেটা পরোক্ষভাবে আমাদের মুখের অপরিচ্ছন্নতার কারণে তৈরি হতে পারে।
এছাড়া জিভে ঘা এর আরেকটি অন্যতম কারণ হচ্ছে পুষ্টির অভাব। আমাদের শরীরে যখন লোহা দস্তা ভিটামিন এ, ভিটামিন বি, অভাব দেখা যায় তখন এই জিহ্বায় ঘা রোগটি দেখা দেয়।
যারা মুখের পাশাপাশি নিয়মিত জিহ্বা পরিস্কার করেন না তাদের ক্ষেত্রেও জিভে ক্ষত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।
অনেকেই দেখা যায় পানির সাথে সুপারি বা জর্দা খায়। আবার অনেক দীর্ঘক্ষণ মুখের ভেতর গুল রেখে দেয়। অনেকেই সিগারেট বা তামাক জাতীয় দ্রব্য ব্যবহার করে। এই ধরনের জিনিস ব্যবহার করলেও জিহ্বায় ঘা হতে পারে।
যারা উচ্চ রক্তচাপ বা পরিপাকতন্ত্র জনিত কোন সমস্যা রয়েছে সেক্ষেত্রেও জিহ্বায় ঘা একটি নিয়মিত সমস্যা।
এছাড়াও যারা নিয়মিতভাবে অনেক ওষুধ সেবন করে বিশেষ করে স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ সেবন করে তাদেরও জিভেও ঘা হতে পারে।
পাশাপাশি যারা অতিরিক্ত ঝাল এবং অতিরিক্ত মসলাদার খাবার খেয়ে থাকে তাদের ক্ষেত্রেও জিভে ঘা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
অনেক সময় নিজের অজান্তে জিভে কামড় পড়ে যায়। কিংবা আমাদের মুখে কতগুলো কৃত্রিম দাগ থাকে যেগুলোর মাধ্যমে আমাদের জিভে বারবার আঘাত পাওয়ার ফলেও জিভে ঘা হতে পারে।
জিহ্বায় ঘা হওয়ার কারণগুলো যেহেতু আমরা এখন জেনে ফেললাম তাই এখন আমরা জানবো জিভে ঘা হলে কি করবেন।
আরও পড়ুন: আমেরিকা যাওয়ার সহজ উপায়
জিহ্বার ঘা হলে করণীয়
জিহ্বার ঘা হলে আমরা যদি একটু সাবধানতার সাথে কিছু নিয়ম মেইনটেইন করি তাহলে ঘা এমনি এমনি ঠিক হয়ে যায় ভালো হয়ে যায়। আমরা যদি নিয়মিত মুখের পাশাপাশি জিভ টাকেও পরিষ্কার করি তাহলে জিভে ঘা হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে।
তারপরেও যদি আপনার জিভে ঘা হয়ে থাকে তাহলে হালকা গরম পানি দিয়ে লবন নিয়ে দিনে তিনবার কুলকুচি করবেন। এতে জিহ্বা পরিষ্কার থাকবে এবং জিভের ঘা ও কমে যাবে।
আপনি আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন। চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে যেগুল ক্রিম বা ওষুধ আছে সেগুলো ব্যবহার করলেও কমে যেতে পারে।
তাছাড়া আপনার যদি পুষ্টি জনিত কোন সমস্যা থাকে বা পুষ্টির অভাব থাকে। তাহলে আপনি নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার খান। তাহলে আপনার জীবের ঘা দ্রুত সেরে যাবে। এর পাশাপাশি আপনি নিয়মিত বেশি বেশি পরিমাণে পানি পান করার চেষ্টা করবেন।
এই কাজগুলো করার পরে যদি আপনার গায়ে এক থেকে দুই সপ্তাহ পর ভালো না হয় তাহলে অবশ্যই আপনি বসে না থেকে চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন। দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে যদি আপনার ঘা ভালো না হয় তাহলে অবশ্যই আপনাকে বায়োপ্সি করে দিবেন মাংস পরীক্ষা করে দেখতে হবে।কারণ এই জিভের সামান্য ঘাও অনেক সময় বিপদজনক হতে পারে।
জিহ্বায় ঘা এর ঔষধ এর নাম
আপনারা অনেকেই ইউটিউবে ভিডিও দেখে বা পোস্ট পড়ে জিহ্বার ঘা ঠিক করা ওষুধের নাম সম্পর্কে জানতে চান। একজন রোগীকে না দেখে এইভাবে স্পেসিফিক কোন ওষুধের নাম বলা ঠিক হবে না। সবসময় ডাক্তার এর পরামর্শ নিয়ে জিহ্বার ঘা এর ওষুধের নাম যেনে নিন।
তবুও আপনাদের সুবিধার্থে কিছু কিছু কমন জিহ্বার ঘা এর ঔষধ এর নাম বলে দিচ্ছি। আশাকরি আপনারা ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে সেবন করবেন।
মুখে ঘা ও ব্যথা থাকে তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী Carmellose Sodium, Benzocaine Gels যুক্ত পেস্ট ও জেল মুখে লাগাতে পারেন। এবং Chlorhexidine Mouthwash মাউথ ওয়াশ মুখের ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে। বাজারে Bongel Cream, Viodin Mouthwash, Riboflabin পাওয়া যায়, যেটা মুখের ঘা এর জন্য ভালো।